ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচার উপায়গুলো কমবেশি আমাদের সবারই জানা, তবু আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। কারণ, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে প্রথাগত সচেতনতার বাইরেও কিছু বিষয় থাকে, যা অনেক সময়ই আমরা এড়িয়ে যাই।

ঘরে-বাইরে খেয়াল রাখুন

মশারি ব্যবহার করুন দিনে ও রাতে। ফ্যান চালিয়ে ঘুমালে মশা কামড়াতে পারে না ভেবে নিশ্চিন্ত থাকার সুযোগ নেই। ঘরের জানালায় হয়তো নেট লাগিয়ে নিয়েছেন, কিন্তু বাথরুমের জানালা বা ভেন্টিলেটর দিয়েও মশা আসতে পারে। দরজা খোলা হলে সেই মুহূর্তেও মশা ঢুকতে পারে। তাই অসতর্ক হবেন না। ফুলহাতা জামা পরুন। ফুলপ্যান্ট পরুন। গাছের পাত্র, ফ্রিজ, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের পানির ব্যাপারে মনোযোগী থাকুন। অব্যবহৃত কমোড ঢেকে রাখুন। বৃষ্টি বেশি হলে বাড়ির ছাদেও পানি জমতে পারে। ছাদের পানি সরিয়ে দিন নিয়মিত। বসে কাজ করার সময় পায়ে মসকিউটো রিপেলেন্ট ব্যবহারের কথা খেয়াল রাখুন। আর বাইরে যাওয়ার সময় মসকিউটো রিপেল্যান্ট সঙ্গে রাখুন। মসকিউটো রিপেলেন্ট কত সময় পর্যন্ত কার্যকর থাকবে, অর্থাৎ কতক্ষণ পর পুনরায় প্রয়োগ করতে হবে, জেনে রাখুন। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে কোন ধরনের মসকিউটো রিপেলেন্ট নিরাপদ, তা জানতে হবে। বাড়িতে কারও ডেঙ্গু জ্বর হলেও কিন্তু তাঁকে মশারি ব্যবহার করতে হবে।

ঘরের সীমানার বাইরে নজর দিন

বাড়ির আশপাশেও একটু নজর দিন। শরতের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। জমা পানিতে জন্মাচ্ছে এডিস মশা। আইসক্রিম বা দইয়ের পাত্র, ডাবের খোলা, এমনকি পলিথিন জাতীয় প্যাকেট পড়ে থাকার কারণেও জমে থাকতে পারে পানি। এসব বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে স্থানীয় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সহায়তা নিন।

প্রতিবেশীদের সচেতন করুন

নিজের ফ্ল্যাটখানা ঠিকঠাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলেই কিন্তু সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। পাড়ার কোনো বাড়িতে জমে থাকা পানিতে মশা জন্মালেও কিন্তু মুশকিল। তাই আপনার প্রতিবেশী সচেতন কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। বিষয়গুলো নিয়ে তার সঙ্গে সুন্দরভাবে আলোচনা করুন।

নির্মাণাধীন ভবন

বাড়ির আশপাশে কোনো নির্মাণাধীন ভবন থাকলে আরও একটু বেশি সচেতন থাকতে হবে। এসব স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা যায়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় ওই জমির স্বত্বাধিকারী ব্যক্তি কিংবা নির্মাণের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিষয়টি সেভাবে তত্ত্বাবধান করা হয় না। এমন হলে প্রতিবেশীদের নিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন। যে শ্রমিকেরা সেখানে কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলুন। জমে থাকা পানিনিষ্কাশনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তাঁদেরও জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *